সূরা ক্বারিআহ এর আরবি, বাংলা উচ্চারণ, বাংলা অর্থ এবং তাফসীর
সূরা ক্বারিআহ এর আরবি, বাংলা উচ্চারণ, বাংলা অর্থ এবং তাফসীর
আরবি উচ্চারন বাংলায় অনেক সময় ভুল থাকে।তাই আপনাদের সবাইকে অনুরোধ করছি, যখন বাংলায় উচ্চারন শিখবেন তখন অবশ্যই আরবির সাথে মিলিয়ে নিবেন। আর যদি কেউ আরবি দেখে পড়তে না পারেন তাহলে অবশ্যই অডিও শোনে বাংলার সাথে মিলিয়ে নিবেন। ধন্যবাদ সবাইকে
بِسْمِ اللّهِ الرَّحْمـَنِ الرَّحِيمِ
اَلۡقَارِعَۃُ ۙ﴿۱﴾ مَا الۡقَارِعَۃُ ۚ﴿۲﴾ وَ مَاۤ اَدۡرٰىکَ مَا الۡقَارِعَۃُ ؕ﴿۳﴾ یَوۡمَ یَکُوۡنُ النَّاسُ کَالۡفَرَاشِ الۡمَبۡثُوۡثِ ۙ﴿۴﴾ وَ تَکُوۡنُ الۡجِبَالُ کَالۡعِہۡنِ الۡمَنۡفُوۡشِ ؕ﴿۵﴾ فَاَمَّا مَنۡ ثَقُلَتۡ مَوَازِیۡنُہٗ ۙ﴿۶﴾ فَہُوَ فِیۡ عِیۡشَۃٍ رَّاضِیَۃٍ ؕ﴿۷﴾ وَ اَمَّا مَنۡ خَفَّتۡ مَوَازِیۡنُہٗ ۙ﴿۸﴾ فَاُمُّہٗ ہَاوِیَۃٌ ؕ﴿۹﴾ وَ مَاۤ اَدۡرٰىکَ مَا ہِیَہۡ ﴿ؕ۱۰﴾ نَارٌ حَامِیَۃٌ ﴿٪۱۱﴾
اَلۡقَارِعَۃُ ۙ﴿۱﴾ مَا الۡقَارِعَۃُ ۚ﴿۲﴾ وَ مَاۤ اَدۡرٰىکَ مَا الۡقَارِعَۃُ ؕ﴿۳﴾ یَوۡمَ یَکُوۡنُ النَّاسُ کَالۡفَرَاشِ الۡمَبۡثُوۡثِ ۙ﴿۴﴾ وَ تَکُوۡنُ الۡجِبَالُ کَالۡعِہۡنِ الۡمَنۡفُوۡشِ ؕ﴿۵﴾ فَاَمَّا مَنۡ ثَقُلَتۡ مَوَازِیۡنُہٗ ۙ﴿۶﴾ فَہُوَ فِیۡ عِیۡشَۃٍ رَّاضِیَۃٍ ؕ﴿۷﴾ وَ اَمَّا مَنۡ خَفَّتۡ مَوَازِیۡنُہٗ ۙ﴿۸﴾ فَاُمُّہٗ ہَاوِیَۃٌ ؕ﴿۹﴾ وَ مَاۤ اَدۡرٰىکَ مَا ہِیَہۡ ﴿ؕ۱۰﴾ نَارٌ حَامِیَۃٌ ﴿٪۱۱﴾
বাংলা উচ্চারণঃ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আলক্বারি আতু মাল ক্বারি'আহ। অমা আদরা কামাল ক্বারিআহ। ইয়াওমা ইয়াকু'নুন্নাসু কালফারা শিল মাবছু'ছি। অতাকু'নুল জিবালুকাল ইহনিল মানফুশ। ফাআম্মা মান ছাকুলাত মাওয়া যীনুহু। ফাহুওয়া ফী ঈশাতির রা'দিয়াহ। অআম্মা মান খাফফাত মাওয়া যীনুহু। ফাউম্মুহু হা ওয়িয়াহ। অমা আদরা কামা হিয়াহ। না রুন হা'মিয়াহ।
আলক্বারি আতু মাল ক্বারি'আহ। অমা আদরা কামাল ক্বারিআহ। ইয়াওমা ইয়াকু'নুন্নাসু কালফারা শিল মাবছু'ছি। অতাকু'নুল জিবালুকাল ইহনিল মানফুশ। ফাআম্মা মান ছাকুলাত মাওয়া যীনুহু। ফাহুওয়া ফী ঈশাতির রা'দিয়াহ। অআম্মা মান খাফফাত মাওয়া যীনুহু। ফাউম্মুহু হা ওয়িয়াহ। অমা আদরা কামা হিয়াহ। না রুন হা'মিয়াহ।
বাংলা অর্থঃ
শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।
মহা প্রলয়, সেই মহা প্রলয় কি? আপনি কি জানেন সে মহা প্রলয় সম্পর্কে? সেদিন লোকেরা সব ইতস্ততঃ বিক্ষিত পঙ্গ পালের ন্যায় হয়ে যাবে, আর পাহাড়সমূহ ধূনিত বঙ্গিন পশমের ন্যায় হয়ে যাবে, অতঃপর যার (ঈমানের) পাল্লা ভারী হবে, অতঃপর সে তো সন্তোসজনক জীবন লাভ করবে, আর যার (ঈমানের) পাল্লা হালকা হবে, অনন্তর তার বাসস্থান হবে হাবিয়ায়, আপনি কি জানেন তা (হাবিয়া) কি? তা হল, এক উত্তপ্ত অগ্নি।
মহা প্রলয়, সেই মহা প্রলয় কি? আপনি কি জানেন সে মহা প্রলয় সম্পর্কে? সেদিন লোকেরা সব ইতস্ততঃ বিক্ষিত পঙ্গ পালের ন্যায় হয়ে যাবে, আর পাহাড়সমূহ ধূনিত বঙ্গিন পশমের ন্যায় হয়ে যাবে, অতঃপর যার (ঈমানের) পাল্লা ভারী হবে, অতঃপর সে তো সন্তোসজনক জীবন লাভ করবে, আর যার (ঈমানের) পাল্লা হালকা হবে, অনন্তর তার বাসস্থান হবে হাবিয়ায়, আপনি কি জানেন তা (হাবিয়া) কি? তা হল, এক উত্তপ্ত অগ্নি।
তাফসীরঃ
আয়াতঃ ১
প্রচন্ড শব্দের দিন বা মহা প্রলয় বা শেষ বিচারের দিন, যেদিন এই সুশৃঙ্খল পৃথিবীর সব কিছু লন্ডভন্ড হয়ে পড়বে এবং পৃথিবী প্রচন্ড বেগে প্রকম্পিত হবে। বর্তমানে আমাদের চোখে যে দৃশ্যমান পৃথিবী তার মানচিত্র মুছে যাবে। সে অভিজ্ঞতা হবে এক কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থা। কিন্তু সেটাই হবে নূতন পৃথিবী সৃষ্টির সূচনা লগ্ন, যেখানে পার্থিব জীবনের প্রতিটি কর্মকে বিচার করা হবে এবং তার প্রকৃত মূল্যমানকে নির্ধারিত করা হবে।
আয়াতঃ ২, ৩ ও ৪
নূতন পৃথিবী সৃষ্টির প্রাক্কালে যখন পুরাতন পৃথিবী প্রচন্ড আলোড়নে লন্ড ভন্ড হয়ে পড়বে, তখন মানুষের অসহায় অবস্থাকে এই আয়াতের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। পতঙ্গ হচ্ছে ক্ষুদ্র,অসহায়, হালকা এক প্রাণী। প্রচন্ড বাতাসের মাঝে তাদের যেরূপ দিগভ্রান্ত, বিক্ষিপ্ত অবস্থা হয়, এই উপমার সাহায্যে কেয়ামত দিবসে মানুষের হতভম্ভ, কিংকর্তব্যবিমূঢ়, অসহায়, অবস্থাকে সে ভাবে তুলে ধরা হয়েছে। মানুষ বিচার দিবসের আতঙ্কে দিশাহারা হয়ে পড়বে। পৃথিবীর স্মৃতি ক্ষীণ হয়ে আসবে, নূতন পৃথিবীর ধারণা তার মাঝে নূতন আশার জন্ম দেবে। কিন্তু নূতন পৃথিবী হবে ন্যায় ও সত্যের উপরে প্রতিষ্ঠিত – যেখানে পৃথিবীতে কৃত কোন সৎ কাজকেই হারিয়ে যেতে দেয়া হবে না। প্রতিটি অসৎ কাজকেই তার ফল বা মূল্য শোধ করতে হবে।
আয়াতঃ ৫
পর্বত হচ্ছে কাঠিন্য ও স্থায়ীত্বের প্রতীক। পৃথিবীর জীবনে পর্বতকে মনে হয় তা ধ্বংস করা কারও পক্ষেই সম্ভব নয়। কিন্তু সেই মহা প্রলয়ের দিনে পর্বত শুধু ধ্বংসই হবে না, তা হবে “ধূণিত পশমের মত”। এটা একটি রূপক বর্ণনা যার সাহায্যে তুলনা করা হয়েছে পৃথিবীতে যাকে আমরা চিরস্থায়ী ও দৃঢ় ভিত্তির উপরে প্রতিষ্ঠিত বলে মনে করি, পরলোকের জীবনে, নুতন পৃথিবীতে তা বাতাসে মিলিয়ে যাবে, যার কোন অস্তিত্বই থাকবে না।
আয়াতঃ ৬
সৎ কাজ বা ভালো কাজকে সেদিন ওজন করা হবে ন্যায় ও অন্যায়ের বাটখাড়াতে এবং প্রকৃত মূল্যমান ধার্যকরা হবে। এই মূল্যায়নের সময়ে শুধুমাত্র সৎ কাজের পরিণতি ও ফলাফলই বিচার করা হবে না, বিচার করা হবে প্রতিটি কাজের উদ্দেশ্য বা নিয়ত। প্রকৃতপক্ষে কি উদ্দেশ্যে কাজটি করা হয়েছে। পৃথিবীর প্রলোভন, প্ররোচণা, উত্তেজনা, কাজের পরিবেশ, সমসাময়িক সমাজের অবস্থান, পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সামাজিক সংশোধন অর্থাৎ এক কথায় খুঁটিনাটি প্রতিটি ব্যাপারেরই ভিত্তিকে প্রত্যেকের কাজকে মূল্যায়নের জন্য বিচার বিবেচনা করা হবে। ঠিক একই ভাবে মন্দ কাজকেও বিচার ও মূল্যায়ন করা হবে। এই মূল্যায়নে ভালো কাজের পাল্লা ভারী হলে তা মানুষকে সন্তোষজনক ও আনন্দদায়ক আলয়ে পথ দেখিয়ে নিয়ে যাবে। অবশ্য এই বাসস্থান হবে নূতন পৃথিবীতে। অবশ্য যে বাটখাড়ার বা পাল্লার উল্লেখ এখানে করা হলো তা হচ্ছে রূপক অর্থে।
আয়াতঃ ৭
ভালো কাজের মূল্যায়নের পুরষ্কার অপার প্রশান্তির জীবন, অবশ্য এই প্রশান্তির গাঢ়তা বা গভীরতা সকলের জন্য সমান হবে না। তা নির্ভর করবে কাজের গুরুত্ব অনুযায়ী। তবে সকল ক্ষেত্রেই তা হবে প্রশান্তি যা প্রতিটি ব্যক্তির ব্যক্তিসত্ত্বার সাথে সমন্বিত থাকবে।
আয়াতঃ ৮, ৯, ১০ ও ১১
পূণ্যাত্মাদের প্রশান্তির যেরূপ বিভিন্ন ধাপ বা মর্যদা বিদ্যমান থাকবে, ঠিক সেরূপ বর্তমান থাকবে শাস্তির বিভিন্ন ধাপ। পাপের গুরুত্ব ও ধাপ অনুযায়ী তা নির্ধারণ করা হবে। ‘হাবিয়া’ হচ্ছে জাহান্নামের নিম্নস্তর।
Comments
Post a Comment