সূরা ফীল এর আরবি, বাংলা উচ্চারণ, বাংলা অর্থ এবং তাফসীর
সূরা ফীল এর আরবি, বাংলা উচ্চারণ, বাংলা অর্থ এবং তাফসীর
আরবি উচ্চারন বাংলায় অনেক সময় ভুল থাকে।তাই আপনাদের সবাইকে অনুরোধ করছি, যখন বাংলায় উচ্চারন শিখবেন তখন অবশ্যই আরবির সাথে মিলিয়ে নিবেন। আর যদি কেউ আরবি দেখে পড়তে না পারেন তাহলে অবশ্যই অডিও শোনে বাংলার সাথে মিলিয়ে নিবেন। ধন্যবাদ সবাইকে
بِسْمِ اللّهِ الرَّحْمـَنِ الرَّحِيمِ
اَلَمۡ تَرَ کَیۡفَ فَعَلَ رَبُّکَ بِاَصۡحٰبِ الۡفِیۡلِ ؕ﴿۱﴾ اَلَمۡ یَجۡعَلۡ کَیۡدَہُمۡ فِیۡ تَضۡلِیۡلٍ ۙ﴿۲﴾ وَّ اَرۡسَلَ عَلَیۡہِمۡ طَیۡرًا اَبَابِیۡلَ ۙ﴿۳﴾ تَرۡمِیۡہِمۡ بِحِجَارَۃٍ مِّنۡ سِجِّیۡلٍ ۪ۙ﴿۴﴾ فَجَعَلَہُمۡ کَعَصۡفٍ مَّاۡکُوۡلٍ ٪﴿۵﴾
اَلَمۡ تَرَ کَیۡفَ فَعَلَ رَبُّکَ بِاَصۡحٰبِ الۡفِیۡلِ ؕ﴿۱﴾ اَلَمۡ یَجۡعَلۡ کَیۡدَہُمۡ فِیۡ تَضۡلِیۡلٍ ۙ﴿۲﴾ وَّ اَرۡسَلَ عَلَیۡہِمۡ طَیۡرًا اَبَابِیۡلَ ۙ﴿۳﴾ تَرۡمِیۡہِمۡ بِحِجَارَۃٍ مِّنۡ سِجِّیۡلٍ ۪ۙ﴿۴﴾ فَجَعَلَہُمۡ کَعَصۡفٍ مَّاۡکُوۡلٍ ٪﴿۵﴾
বাংলা উচ্চারণঃ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আলামতারা কাইফা ফা'আলা রাব্বুকা বিআছহা বিল ফীল। আলাম ইয়াজ 'আল কাইদাহুম ফী তাদ্বলীল। অ'আরসালা 'আলাইহিম ত্বায়াইরান আবা-বীল। তারমীহিম বিহিজ্বারাতিম মিন সিজ্জীল। ফাজা'আলাহুম কা'আছফিম মা'কূল।
আলামতারা কাইফা ফা'আলা রাব্বুকা বিআছহা বিল ফীল। আলাম ইয়াজ 'আল কাইদাহুম ফী তাদ্বলীল। অ'আরসালা 'আলাইহিম ত্বায়াইরান আবা-বীল। তারমীহিম বিহিজ্বারাতিম মিন সিজ্জীল। ফাজা'আলাহুম কা'আছফিম মা'কূল।
বাংলা অর্থঃ
শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।
আপনি কি দেখেন নি, আপনার রব হস্তী বাহিনীর সাথে কি ব্যবহার করলেন (কা'বা গৃহের ধ্বংসের ব্যপারে)? তিনি কি তাদের কৌশলকে সম্পূর্ণ ব্যর্থ করে দেন নি? আর তিনি তাদের উপর ঝাঁকে ঝাঁকে আবাবিল পাখি প্রেরণ করলেন। যারা তাদের উপর কঙ্কর জাতীয় প্রস্তরসমূহ নিক্ষেপ করেছিলেন অতঃপর আল্লাহ তাদেরকে ভক্ষণকৃত ঘাসের ন্যায় করে দিলেন।
আপনি কি দেখেন নি, আপনার রব হস্তী বাহিনীর সাথে কি ব্যবহার করলেন (কা'বা গৃহের ধ্বংসের ব্যপারে)? তিনি কি তাদের কৌশলকে সম্পূর্ণ ব্যর্থ করে দেন নি? আর তিনি তাদের উপর ঝাঁকে ঝাঁকে আবাবিল পাখি প্রেরণ করলেন। যারা তাদের উপর কঙ্কর জাতীয় প্রস্তরসমূহ নিক্ষেপ করেছিলেন অতঃপর আল্লাহ তাদেরকে ভক্ষণকৃত ঘাসের ন্যায় করে দিলেন।
তাফসীরঃ
আয়াতঃ ১
‘তুমি কি দেখ নাই' এ ভাবে আল্লাহ্ রাসুলকে (সাঃ) সম্বোধন করেছেন। যদিও ঘটনাটি ঘটেছিলো রাসুলের জন্মের পূর্বে। এই ‘দেখা' কোন শারীরিক দেখা নয়। ঘটনার অত্যাচার্য বিবরণ শুনে হৃদয়ের মাঝে প্রত্যক্ষ করাকেই এখানে বুঝানো হয়েছে। রাসুলের জন্মের সময়ে ঘটনাটি তখনও ছিলো সদ্য সুতারাং বিবরণের খুঁটিনাটি সবই ছিলো অবিকৃত।
‘হস্তী অধিপতি’ দ্বারা আবরাহার সেনাবাহিনীকে বুঝানো হয়েছে। এই সেনা বাহিনীতে বহু সংখ্যক হস্তী বিদ্যমান ছিলো। এই সেনা বাহিনী দ্বারা আবরাহা মক্কা আক্রমণ করেছিলো কাবা শরীফ ধ্বংস করার জন্য। দেখুন সূরাটির ভূমিকা।
আয়াতঃ ২ ও ৩
অলৌকিক ঘটনাটি ছিলো এরূপ যে অগ্রগামী সেনা দল মক্কার সীমান্তে পৌঁছানোর পূর্বেই ছোট ছোট পাখীর ঝাঁক দিগন্ত অন্ধকার করে ফেলে। এ সব পাখীরা প্রত্যেকেই একখন্ড ‘প্রস্তর কঙ্কর' ধারণ করে ছিলো, যা তারা সেনা বাহিনীর উপরে উচ্চ স্থান থেকে নিক্ষেপ করে। মধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে ছোট নূরী পাথরও বৃষ্টির ফোঁটার ন্যায় দ্রুত নীচে নেমে আসে এবং তীব্র গতির ফলে ভারী ও সুচালো অস্ত্রের ন্যায় হয়ে পড়ে এ সব প্রস্তর খন্ড, হস্তী বাহিনীকে সজোড়ে আঘাত করে। ফলে আবরাহার সমগ্র বাহিনী ধ্বংস হয়ে যায়।
আয়াতঃ ৪
‘সিজ্জীল’ শব্দটির অর্থ হচ্ছে পোড়া মাটির শক্ত পাথরের ন্যায় টুকরো।
আয়াতঃ ৫
ফসলের জমি থেকে ফসল কেটে নেয়ার পরে, ফসলের গোড়া মাঠে থেকে যায়। সে সময় ফসলের মাঠকে দেখায় রিক্ত ও মৃতবৎ মনে হয়। আবরাহার সৈন্য সামন্ত সম্বন্ধে ঠিক সেই একই উপমা দেয়া হয়েছে। কঙ্করের আঘাতে বিধ্বস্ত সুবিশাল সেনা বাহিনী ছিলো মৃত এবং সেনাবাহিনী হিসেবে ব্যবহারের অযোগ্য। অন্য আর এক ভাবেও এর ব্যাখ্যা করা যায় যে সেনা বাহিনীকে মনে হচ্ছিল যেন ‘ভক্ষিত খড় এবং গোবরের মাঝে খড়ের অংশ বিশেষ।” অবশ্য উভয় ক্ষেত্রেই অর্থ একই তবে শেষোক্ত ক্ষেত্রে অর্থটি অধিক প্রযোজ্য।
এই সূরার মাধ্যমে যে বিশ্বজনীন উপদেশ দান করা হয়েছে তা দ্বিবিধ। সমসাময়িক মোশরেক কোরাইশদের জন্য উপদেশ ছিলো যে, আল্লাহ্ নিজেকে রক্ষা করতে সক্ষম। যদি তারা রাসুলকে (সাঃ) নির্যাতন করে,তবে মনে রাখতে হবে, কাবা ছিলো আল্লাহ্র ঘর মাত্র, কিন্তু রাসুল আল্লাহ্র প্রিয় নবী ও বন্ধু। সুতারাং কাবা শরীফের থেকে রাসুলের অস্তিত্ব ও সম্মান অনেক বেশী ও বড়। সুতারাং কোরাইশদের সকল অত্যাচার ও নির্যাতন থেকে আল্লাহ্ই তাঁকে রক্ষা করবেন। এই সূরার বিশ্বজনীন উপদেশ হচ্ছে : মানুষ ক্ষমতা ও সম্পদের দ্বারা প্রমত্ত ও উচ্ছৃঙ্খল হয়ে পড়ে ; ফলে তারা নিজেদের এতটাই শক্তিশালী মনে করে যে তারা আল্লাহ্র ক্ষমতাকে প্রতিদ্বন্দীতায় আহ্বান করার সাহস পায় এবং আল্লাহ্র বিশ্বজনীন পরিকল্পনাকে নস্যাৎ করার চেষ্টা করে কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদের পরিকল্পনা তাদেরই ধ্বংস ডেকে আনে। আল্লাহ্র বিরুদ্ধে তারা ঝড়ের মুখে পালকের ন্যায় উড়ে যায়।
Comments
Post a Comment