সূরা কাওছার এর আরবি, বাংলা উচ্চারণ, বাংলা অর্থ এবং তাফসীর
সূরা কাওছার এর আরবি, বাংলা উচ্চারণ, বাংলা অর্থ এবং তাফসীর
আরবি উচ্চারন বাংলায় অনেক সময় ভুল থাকে।তাই আপনাদের সবাইকে অনুরোধ করছি, যখন বাংলায় উচ্চারন শিখবেন তখন অবশ্যই আরবির সাথে মিলিয়ে নিবেন। আর যদি কেউ আরবি দেখে পড়তে না পারেন তাহলে অবশ্যই অডিও শোনে বাংলার সাথে মিলিয়ে নিবেন। ধন্যবাদ সবাইকে
بِسْمِ اللّهِ الرَّحْمـَنِ الرَّحِيمِ
اِنَّاۤ اَعۡطَیۡنٰکَ الۡکَوۡثَرَ ؕ﴿۱﴾ فَصَلِّ لِرَبِّکَ وَ انۡحَرۡ ؕ﴿۲﴾ اِنَّ شَانِئَکَ ہُوَ الۡاَبۡتَرُ ٪﴿۳﴾
اِنَّاۤ اَعۡطَیۡنٰکَ الۡکَوۡثَرَ ؕ﴿۱﴾ فَصَلِّ لِرَبِّکَ وَ انۡحَرۡ ؕ﴿۲﴾ اِنَّ شَانِئَکَ ہُوَ الۡاَبۡتَرُ ٪﴿۳﴾
বাংলা উচ্চারণঃ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
ইন্না আ'ত্বাইনা কাল কাওছার। ফাছাল্লি লিরাব্বিকা ওয়ানহার। ইন্না শা-নিয়াকা হুওয়াল আবতার।
ইন্না আ'ত্বাইনা কাল কাওছার। ফাছাল্লি লিরাব্বিকা ওয়ানহার। ইন্না শা-নিয়াকা হুওয়াল আবতার।
বাংলা অর্থঃ
শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।
নিশ্চই আমি আপনাকে কাউছার প্রদান করলাম। অতএব আপনি আপনার রবের জন্য নামায পড়ুন ও কোরবানী করুন। নিশ্চই আপনার শত্রুরাই নির্বংশ।
নিশ্চই আমি আপনাকে কাউছার প্রদান করলাম। অতএব আপনি আপনার রবের জন্য নামায পড়ুন ও কোরবানী করুন। নিশ্চই আপনার শত্রুরাই নির্বংশ।
তাফসীরঃ
আয়াতঃ ১
‘আল-কাওছার’ – আক্ষরিক অর্থ সব কিছুর আধিক্য, বিশেষ অর্থে “মঙ্গলের প্রাচুর্য।” আল্লাহ্র অফুরন্ত নেয়ামত, যা আল্লাহ্ তার রাসুল হযরত মুহম্মদের (সাঃ) উপরে বর্ষণ করেছিলেন। জান্নাতের একটি বিশেষ প্রস্রবণের নামও হচ্ছে ‘কাওছার'। আল্লাহ্ রাসুলকে (সাঃ) সেই বিশেষ প্রস্রবণ দানেরও প্রতিজ্ঞা করছেন। এই স্বর্গীয় প্রস্রবন হচ্ছে আল্লাহ্র সীমাহীন মহিমা, দয়া। আল্লাহ্ নবীকে দান করেছিলেন অফুরন্ত সত্য জ্ঞান, প্রজ্ঞা, আধ্যাত্মিক ক্ষমতা, অন্তর্দৃষ্টি।
আয়াতঃ ২
সমস্ত নেয়ামতের মালিক আল্লাহ্। সুতারাং কৃতজ্ঞতা ও ভক্তির সাথে আমাদের শুধুমাত্র আল্লাহ্রই এবাদত করা উচিত। আল্লাহ্র জন্য আমাদের ‘কুরবাণী’ দিতে বলা হয়েছে। ‘নাহর’ শব্দটির অর্থ উৎসর্গ করা যা আনুষ্ঠানিক ভাবে পশু কুরবানীকে বুঝায়। তবে একথা মনে রাখতে হবে ধর্মের আনুষ্ঠানিকতা হচ্ছে সামান্য প্রতীক মাত্র কিন্তু তা গভীর অর্থবোধক। কুরবানীর আনুষ্ঠানিকতার গভীরে যে গুঢ় আধ্যাত্মিক ভাবার্থ বিরাজ করে তা অনুধাবন যোগ্য। আল্লাহ্র সন্তুষ্টির জন্য পশুকে কুরবানী দেয়া হয়, এবং মাংস গরীবদের মাঝে বিতরণ করা হয়। এখানে পশু কোরবানী হচ্ছে আমাদের হৃদয়ের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের প্রতীক যা করা হয় হযরত ইব্রাহীমের নিজ সন্তানকে কোরবানীর অনুসরণে। আল্লাহ্ বলেছেন,” কোরবানীর পশুর রক্ত বা মাংস কিছুই আল্লাহ্র নিকট পৌঁছায় না; আল্লাহ্র নিকট পৌঁছায় তোমাদের মনের তাকওয়া।”। এটাই হচ্ছে কুরবানীর প্রতীক। যে কোন ব্যাপারেই আল্লাহ্র সন্তুষ্টির জন্য আত্মত্যাগ ও আত্মোৎসর্গ আল্লাহ্ আমাদের নিকট দাবী করেন।
আয়াতঃ ৩
ঘৃণা ও বিদ্বেষ কখনও মহৎ কিছুর জন্ম দিতে পারে না। এই আয়াতটি অবতীর্ণ হওয়ার পটভূমি হচ্ছে : বিবি খাদিজার গর্ভে জন্ম রাসুলের (সাঃ) দুই শিশু পুত্রের মৃত্যুর পরে ইসলামের শত্রুরা বিশেষভাবে আবু জহল, প্রমুখেরা রাসুলকে (সাঃ) কষ্ট দেয়ার জন্য ‘লেজ কাটা' বলে ডাকে। তাদের ধারণা হয়েছিলো যে, রাসুলের যেহেতু কোন পুত্র সন্তান রইল না, সুতারাং তাঁর মৃত্যুর পরে তাঁর প্রচারিত দ্বীনও থাকবে না। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে সময়ের পরিক্রমায় ইসলামের আলো আরও উজ্জ্বল ভাবে চতুর্দ্দিকে উদ্ভাসিত করে তুলেছিলো। আবু জহলদের বিষাক্ত ছোবল রাসুলের (সাঃ) কোন ক্ষতিই করতে পারে নাই, বরং তারাই নিজেরা ধ্বংস হয়েছে। এ ভাবেই যারা বিদ্বেষ, ঈর্ষা ও ঘৃণা অন্তরে পোষণ করে তারা নিজেরাই এর দহনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এই হচ্ছে বিশ্ববিধাতার অলিখিত আইন। অর্থাৎ তাদের অন্তরের শান্তি তিরোহিত হয়, ফলে তারা স্বাভাবিক মানুষের ন্যায় কিছু করতে সক্ষম হবে না।
Comments
Post a Comment